রুহুল আমিন রুকু,কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধঃ
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে শোক পালনকে কেন্দ্র করে কুড়িগ্রামের রৌমারীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছেন।মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে উপজেলার রৌমারী বাজার সার্বজনীন কালী মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের কারণে শোক পালনের কর্মসূচি ভেস্তে গেছে। আহতরা হলেন ওই এলাকার গৌতম দাস, আকাশ দাস, বিপ্রদাস অপর পক্ষের পরেশ শাহা, নরেশ শাহা, আশিশ শাহা, মিন্টু চক্রবর্তী, অনিক শাহা ও সবুজ শাহা।স্থানীয় সূত্র জানায়, রৌমারী বাজার সার্বজনীন কালী মন্দিরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের দুটি পক্ষের বিরোধ সৃষ্টি হয়। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন প্রদীব কুমার সাহা, অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন গৌতম দাস। এ নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে পক্ষে-বিপক্ষে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল।বিবাদমান দুই পক্ষের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার মন্দির তালাবদ্ধ ছিল। মন্দির খুলতে চাবি চাওয়া নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ৯ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর থেকে মন্দির এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।এ ব্যাপারে গৌতম দাস বলেন, ‘আমাদের মন্দিরটি প্রদীব কুমার শাহা দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন। এ ছাড়া মন্দিরের স্বার্থ ও সার্বিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে পালন করেন না। এ নিয়ে প্রতিবাদ জানালে তারা আমাদের ওপর চড়াও হন ও মারার হুমকি দেন। মঙ্গলবার তারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
তবে প্রদীব কুমার সাহা বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার সময় মন্দিরের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন উন্নয়মূলক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ধর্মীয় উৎসবগুলো যথা নিয়মে পালন করে আসছি। কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে মঙ্গলবার সরকারঘোষিত শোক পালন ও প্রার্থনার বিষয়ে মন্দিরের মূল ফটক তালাবদ্ধ থাকায়, তা খুলতে চাবি চাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের ওপর চড়াও হন। পরে শোক পালন করতে পারিনি। ওই পক্ষ মন্দিরকে কৌশলে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মুর্তজা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় শোক পালনে বিশেষ প্রার্থনা আয়োজনকে কেন্দ্র করে মন্দিরের দুটি পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে পুলিশ।’দুই পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বসে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ওসি আরও বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply