শাহারুল ইসলাম,গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
কার্পটিংয়ের কয়েকদিন যেতে না যেতেই উঠে যায় সড়কের কার্পেটিং। অনিয়মে জর্জরিত উপজেলার উন্নয়নমূলক কাজ। উপ-সহকারী প্রকৌশলী হেলালুর রহমানের যোগসাজসেই অনিয়ম করার সাহস পান ঠিকাদাররা। তিনি পলাশবাড়ী উপজেলায় দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ কর্মরত থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। একই উপজেলায় দীর্ঘদিন থেকে কর্মরত থাকায় ঠিকাদারদের সাথে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠার ফলে অনিয়ম যেন বেড়েই চলেছে যা দেখার কেউ নেই। নতুন রাস্তা, কালভার্ট, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা’র ভবন ও ঈদগাহ নির্মাণে সরকারি বা অবকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজে তিনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের কাছে উৎকোচ নিয়ে থাকেন। কোন ঠিকাদার উৎকোচ দিতে অস্বীকার বা রাজি না হলে তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হয় বলে ভূক্তভোগী ঠিকাদারদের অভিযোগ রয়েছে।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের কোমরপুর বাঁশহাটি হতে ছলিমের তেকানী পর্যন্ত ১ হাজার মিটার সড়কের কার্পেটিং ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী হেলালুর রহমান ও ঠিকাদার আঙ্গুরের বিরুদ্ধে। তার কাছে তথ্য চাইলেও সাংবাদিকদের কোন তথ্য দেন না। তবে তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ঠিকাদারদের সাথে কমিশনে কাজ করেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী হেলালুর রহমান। যার ফলে পলাশবাড়ীতে সরকারের উন্নয়ন কাজে দিন দিন অনিয়ম বেড়েই চলছে। জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে উক্ত রাস্তার কাজটি পায় ঠিকাদার আঙ্গুর নামে এক ব্যক্তি। কাজটির শুরুতেই বিভিন্ন ইটভাটা থেকে অত্যান্ত নিম্নমানের রেডিমেট খোয়া দিয়ে রোলিং এবং নিম্নমানের বিটুমিন দিয়ে রাস্তার কার্পেটিং করায় এলাকাবাসী কাজ বন্ধ করে দেন। তবে পলাশবাড়ীর এলজিইডি উপ-সহকারী প্রকৌশলী হেলালুর রহমানের যোগসাজসে ঠিকাদারের এমন দুর্নীতি অনিয়মের প্রশ্রয় পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন আগে রাস্তাটির কার্পেটিং কাজ শুরু করেছিলেন ঠিকাদার। শুরুর দিন থেকেই উঠে যাচ্ছে পিচ ঢালাইয়ে কার্পেটিং। তাছাড়া কার্পেটিং করার আগে সড়কটি পরিষ্কার না করে ধুলো ময়লার উপরে শুরু করেছে পিচ ঢালাইয়ের কাজ। ধুলা মিশ্রিত পাথর, নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করায় রাস্তার এমন বেহাল দশা হয়েছে। তাছাড়া ঠিকাদার ও এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলীর যোগসূত্রে নিম্নমানের ও কমদামী সামগ্রী দিয়ে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। জানা যায়, বরিশাল ইউনিয়ন পরিষদ হতে কোমরপুর বাশঁহাটি হয়ে ছলিমের টেকানি পর্যন্ত ১ হাজার মিটার সড়কের কাজ বাস্তবায়ন করছেন ঠিকাদার আঙ্গুর। স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল বলেন, নিম্নমানের বিটুমিন ও সড়ক পরিষ্কার না করেই পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করার ফলে রাস্তার পিচ হাত দিলে উঠে যাচ্ছে। এভাবে হলে সরকারের টাকা শুধু অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। রাস্তার পিচ ঢালাই কাজ চলমান রয়েছে । কিন্তু শুরুর দিন থেকেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের দুর্নীতি কারণে সড়কের এমন দশা। এই বিষয়ে ঠিকাদার আঙ্গুর এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি রাস্তার সম্পন্ন দায়-দায়িত্ব উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী হেলালুর রহমানকে বুঝিয়ে দিয়েছি। আপনারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এই বিষয়ে রাস্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী হেলালুর রহমানকে একাধিক বার ফোনে চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার অফিসে দেখা করে তথ্য চাইলে তিনি তথ্য দিতে অস্বীকার করেন। এলাকাবাসীর দাবী এই জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির কাজ সঠিকভাবে বুঝে নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
Leave a Reply