শাহারুল ইসলাম,গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে কালো মেঘ (ঔষধি গাছ) চাষের উজ্জ্বল সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। লাভজনক হওয়ায় এখানকার অনেক কৃষকই এখন কালো মেঘ চাষ করছে। ইউনানী আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল হিসেবেও এখন গাইবান্ধায় কালো মেঘ ব্যবহার হচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, কালোমেঘ জ্বর থেকে শুরু করে অজীন, যকৃতের গোলযোগসহ অনেক জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসায় কার্যকর ভূমিকা রাখে। কালো মেঘের বৈজ্ঞানিক নাম “এন্ড্রোগ্রাফিস প্যানিকুলাটা”। এই গাছ আধামিটার থেকে এক মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। কান্ড শাখা-প্রশাখা চারকোণাকৃতি, নরম ও সবুজ।সাধারণত এপ্রিল ও মে মাস চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। জুলাই-আগস্ট মাসে কর্তন করা হয়। তবে পরিপক্ব বীজ মাটিতে পড়ে আপনা-আপনি কালো মেঘ গাছ জন্মে। তুলনামূলকভাবে এটি ছায়াযুক্ত জায়গাতে বেশি জন্মায় বলে অন্য গাছের নিচে এবং সাথী ফসল হিসেবেও এর চাষ করা যায়। সামান্য মাটি খুঁড়ে বীজ বপন করলে ফলন বাড়ে। কালো মেঘ অঞ্চলভেদে কল্পনাথ হিসেবেও পরিচিত। অনেকে অত্যাধিক তেতো স্বাদের এ গাছ শুকিয়ে চিরতা বলে বিক্রি করে থাকে।কালো মেঘ চাষের অগ্রপথিক আমবাড়ী গ্রামের আফরু ও মিন্টু বলেন, আমরা শর্মিলা আপার কথায় প্রথমবার কালো মেঘ চাষ শুরু করলাম। যদি ফলন ভালো পাই আমরা সামানের বছর থেকে আরো বেশি করে চাষাচাদ করবো। কালো মেঘ ফসলে তেমন কোন রোগ বালাইও হয় না। অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টিতে কোন সমস্যা হয় না। কালো নেঘ প্রতি শতকে প্রায় ১ মণ হয়। যার বাজার মূল্য ২ হাজার ৪’শ থেকে ২ হাজার ৬’শ টাকা পর্যন্ত। কালো মেঘ বিক্রি করতে কোন অসুবিধা হয় না। দেশের স্বনামধন্য ঔষধ কোম্পানী স্কয়ার, একমি সহ বেশকিছু কোম্পানীর প্রতিনিধিরা যোগাযোগ করে সরাসরি জমি থেকে নগদ মুল্যে এই কালো মেঘ ক্রয় করে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শর্মিলা শারমিন বলেন, আমার ব্লক পলাশবাড়ী পৌরসভা। এ ব্লকে কৃষকদের দ্বারা ২ হেক্টর জমিতে কালো মেঘ চাষ শুরু করাতে পেরেছি। আশা করছি সামনে বছর কালো মেঘ চাষ আরো বাড়বে। বিঘা প্রতি প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচের বিপরীতে ৬০ থকে ৬৫ হাজার টাকার কালো মেঘ বিক্রি করা যায়। স্বল্প খরচে অধিক লাভের আশায় কৃষকরা এই কালো মেঘ চাষের উপর ঝুঁকে পড়েছেন। আমার এলাকা পৌর শহরের “উদয়সাগর ও আমবাড়ী” গ্রামের কৃষকরা কালোমেঘ চাষ বৃদ্ধি করেছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেমা কাউসার মিশু বলেন, পলাশবাড়ী উপজেলা জুড়ে এবার ৬ হেক্টর জমিতে কালোমেঘ চাষ হচ্ছে। প্যারাসিটামলসহ অর্ধশতাধিক এলোপ্যাথিক, হোমিওপ্যাথিক ও হারবাল ওষুধ তৈরিতে কালোমেঘ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে।
Leave a Reply