1. info@dainikashardigonto.com : দৈনিক আশার দিগন্ত : দৈনিক আশার দিগন্ত
  2. info@www.dainikashardigonto.com : দৈনিক আশার দিগন্ত :
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১৫ অপরাহ্ন

একটি গাছ, একটি প্রাণ

  • প্রকাশিত: বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

কলমে- মিনতি গোস্বামী

 

 

 

দু ‘ হাজার চব্বিশে তীব্র দাবদাহ চলছে প্রায় তিন মাস ধরে। স্কুলগুলোতে গরমের ছুটি আগেভাগে দিলেও, যখন স্কুল খুললো, গরম কমেনি।পয়তাল্লিশ থেকে আটচল্লিশ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে তাপপ্রবাহ। আষাঢ় মাস পর্যন্ত বৃষ্টির দেখা নেই। এবার কালবৈশাখীও হয়নি।স্কুলে গিয়ে স্যার আর ম্যামদের কাছে, বাড়িতে মা-বাবার কাছে অনিকেত রোজ শুনছে, গাছ কাটা হচ্ছে বেশি করে, তাই বৃষ্টি আসছে না।আবহাওয়া দিন দিন উত্তপ্ত হচ্ছে। অনিকেত ক্লাসে শুনছে “একটি গাছ, একটি প্রাণ “। কিন্তু গাছ লাগাবে কে, গাছ কাটছেই বা কে, এই প্রশ্নগুলো ছোট্ট অনিকেতকে ভাবায় সব সময়।অষ্টম শ্রেণির বাংলা ক্লাসে সেদিন কৃষ্ণা ম্যাম যখন ” একটি গাছ, একটি প্রাণ ” রচনা লিখতে দিলেন, অনিকেত আর স্থির থাকতে পারেনি। উঠে ম্যামকে বললো, ” ম্যাম, রচনা লিখে কি আমাদের উষ্ণায়নের সমস্যা মিটবে? গাছ লাগানোর কথা আমরা রোজ বলছি, কিন্তু আমরা কেন গাছ লাগাচ্ছি না।ঐন্দ্রিকা বললো, ” আরে বুদ্ধু, গাছ লাগাবিটা কোথায়? এখন তো সব ফ্ল্যাট বাড়িতে থাকে। মাটি আছে কারোর বাড়িতে, কোথায় গাছ লাগাবো আমরা? “অনিকেত বলে, ” এত বড় আমাদের স্কুল, আগে এখানে বড় বড় পাতাওয়ালা কিছু গাছ লাগাই।বৃষ্টি পড়লে আমরা গাছ লাগানোর অভিযান করতে পারি সাত দিন ধরে।আমাদের স্কুলের যে বিশাল ছাদ, সেখানেও আমরা গাছ লাগাতে পারি।” ছাত্র- ছাত্রীদের উৎসাহ দেখে কৃষ্ণা ম্যাম বললেন, ” ঠিক বলেছো, কালই হেডমাস্টার মশাইকে বলে আমরা একটা মিটিং ডাকি। সেখানেই তোমরা তোমাদের বক্তব্য রাখবে। পরের দিন টিফিনে স্কুলের অডিটোরিয়ামে মিটিং ডাকা হল। শিক্ষক-শিক্ষিকারা এবং ছাত্রছাত্রীরা সবাই উষ্ণায়ন সমস্যার সমাধানে বক্তব্য রাখলো।সভায় ঠিক হলো , সামনের সপ্তাহে স্কুলের ফাঁকা জায়গায় এবং শহরের বিভিন্ন জায়গায় স্কুলের উদ্যোগে গাছ বসানো হবে। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে পাঁচটি করে গাছ দেওয়া হবে। তিনটি ফুলের গাছ ও দুটি করে নিমগাছ। নিম গাছের কার্বন শোষণের ক্ষমতা বেশি এবং এটি ভেষজ গুণসম্পন্ন, তাই নিম গাছ বসাতেই হবে। দেশের যা জনসংখ্যা তার মাথাপিছু দুটি করে নিমগাছ এখনই লাগালে আগামীতে উষ্ণায়ন রোখা সম্ভব।সভার কথামতো কাজ শুরু হল পরের সপ্তাহেই। বিদ্যাসাগর শিক্ষা মন্দিরের ছেলেমেয়েরা নিজেদের স্কুল, নদীর ধার, শ্মশান ঘাট ও রাস্তার ধারে প্রায় পঞ্চাশ হাজার গাছ লাগালো সাত দিন ধরে। ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের উঠোন, যাদের নেই ছাদে, বাড়ির সামনের রাস্তায় গাছ লাগালো।

স্থানীয় মানুষদের গাছগুলোকে দত্তক দেওয়া হলো।গাছ তদারকির জন্য।বৃষ্টি আসতেই অনিকেত ও ঐন্দ্রিকা খুশিতে ভাসতে থাকে । তাদের গাছগুলো বর্ষার জল পেয়ে বেড়ে উঠবে। কি আনন্দ, কি আনন্দ। এখন ওরা ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখে ওদের কংক্রিটের শহর সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে। রাস্তার দু’পাশের গাছগুলো গলাগলি করে জড়িয়ে আছে ঠিক ওদের বন্ধুত্বের মতন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
𝐂𝐫𝐚𝐟𝐭𝐞𝐝 𝐰𝐢𝐭𝐡 𝐛𝐲: 𝐘𝐄𝐋𝐋𝐎𝐖 𝐇𝐎𝐒𝐓