শাহারুল ইসলাম,গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা সরকারী খাদ্য গুদাম (এলএসডি) গোডাউন থেকে প্রায় ৩’শ মেঃটন চাল ও গম আত্মসাত এর অভিযোগ ওঠেছে ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তা আব্দুল্যা আল মামুন ছিদ্দিকের বিরুদ্ধে। এদিকে চাল ও গম আত্মসাতের ঘটনা জানাজানি হলে পালিয়ে যান ওই গুদাম কর্মকর্তা। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে তাকে বদলী করার পাশাপাশি ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু কোথায় বদলী করা হয়েছে কর্তৃপক্ষ সেটাও জানেনা। খাদ্য গুদাম সুত্রে জানা যায়, খাদ্য অধিদপ্তরের আদেশে পলাশবাড়ী খাদ্য গুদামের খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্ল্যা আল মামুন ছিদ্দিকির নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি পরিলক্ষিত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে। বদলীর আদেশ হাতে পেয়ে বেকায়দায় পরে যান গুদাম কর্মকর্তা আব্দুল্ল্যা আল মামুন ছিদ্দিকি, কারন তিনি বিভিন্ন উপায়ে বদলীর আগেই গুদাম থেকে সরিয়ে ফেলেছেন প্রায় ৩’শ মে:টন চাল ও গম। অবস্থার বেগতিক দেখে পরবর্তী দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর না করেই গা-ঢাকা দিয়েছেন খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্ল্যা আল মামুন ছিদ্দিকি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জানান, উক্ত ঘটনার সাথে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জড়িত থাকতে পারে যা তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। এত অল্প সময়ে প্রায় ৩’শ মে: টন চাল ও গম কিভাবে আত্মসাৎ করা হলো তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ব্যক্তি জানিয়েছেন দু-একজন অসৎ ব্যবসায়ী ও কতিপয় লেবার এই চাল ও গম রাতের অন্ধকারে পাচার করেছেন। তবে মিল ও চাতাল মালিকরা বলছে প্রায় ৩’শ মেঃটন চাল তারা গুদামে দিয়েছে কিন্তু তাদের বিল পরিশোধ না করেই গা-ঢাকা দিয়েছে ওই কর্মকর্তা। আবার অনেক ব্যবসায়ীর নিকট চেক দিয়ে কর্জ করেছেন প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। নিয়মিত পাক্ষিক পরিদর্শনের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাজমুল হক জানান,কর্মকর্তার বদলি হলেও তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর না করেই পালিয়েছেন। চাল ও গম ঘাটতি থাকার বিষয়টি ও উক্ত ঘটনায় মামলা বা বিভাগীয় মামলার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোন তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং সাংবাদিকদের তথ্য আইনে আবেদন করে তথ্য নিতে বলেন। তিনি আরো দাবী করেন খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি নিয়মিত পাক্ষিক খাদ্য গুদাম পরিদর্শন ও প্রতিবেদন দিয়েছেন সে সময় তিনি সব মালামাল সঠিক ভাবে হিসাব পেয়েছেন।
তবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিজানুর রহমান জানান, এঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কিছু খাদ্য কম পাওয়া যায়। গুদাম কর্মকর্তা অন্যত্র বদলি হয়েছে এবং নতুন একজনকে খাদ্য গুদামে প্রেরণ করা হয়েছে। এখন খাদ্য গুদামের কাজ স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে। গঠিত তদন্ত কমিটির এ প্রতিবেদনের আলোকে অভিযুক্ত কর্মকর্তাসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এবিষয়ে পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ কেএম আজমিরুজ্জামান জানান, অভিযোগ পেয়ে দুদকে প্রেরণ করা হয়েছে। দুদক তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট আইনে ব্যবস্থা নিবেন।
Leave a Reply