রিতু,দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিভূতি কুমার রায় প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, শারিরীক প্রতিবন্ধী মোছাঃ লাইলী বেগম প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্তির জন্য তার সকল কাগজপত্র এবং মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট এর জন্য নিজ মোবাইল নম্বর ইউপি সদস্যের নিকট প্রদান করেন। ইউপি সদস্য বিভূতি সমাজসেবা অফিসে প্রদানের সময় প্রতিবন্ধীর নিজস্ব মোবাইল নম্বর না দিয়ে নিজ মোবাইল নম্বর দেন। যার ফলে প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা ইউপি সদস্যের নিজ মোবাইল আসে। একই সঙ্গে ভাতা প্রাপ্তির আবেদন কারী সবার মোবাইলে টাকা আসলেও ভুক্তভোগী লাইলী বেগমের মোবাইলে টাকা না আসায় ইউপি সদস্য বিভূতির সাথে যোগাযোগ করলে ইউপি সদস্য বিভূতি কুমার জানান ‘টাকা আসলে পাবেন’। এভাবে বেশ কিছুদিন যাওয়ার পরেও টাকা না আসায়, ভূক্তভোগী অপর আরেক ইউপি সদস্য কে সাথে নিয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করলে সমাজ সেবা অফিস থেকে একটি নস্বর প্রদান করা হয় এবং উক্ত নম্বরে তার ভাতার টাকা প্রদান করা হয়েছে মর্মে নিশ্চিত করা হয়। উক্ত মোবাইল নম্বরটি যাচাই করে দেখা যায় সেটি ইউপি সদস্য বিভূতি কুমার রায় এর নম্বর। সে সময় ভুক্তভোগী কে ইউপি সদস্য তার ভাতার ১ম ধাপের সাত হাজার পাঁচশত টাকা (৭৫০০/-) দিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। কিন্তু আজকে দিবো কালকে দিবো সকালে দিবো সন্ধ্যায় দিবো এভাবে তালবাহানা করে অনেকদিন অতিবাহিত হলেও ভুক্তভোগী টাকা না পাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র রায় কে অবহিত করা হলে চেয়ারম্যান টাকা তুলে দেওয়ার দায়িত্ব গ্রহন করেন৷ কিন্তু এভাবে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও চেয়ারম্যান ভুক্তভোগীর টাকা তুলে দেওয়ার বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নি। এরই মাঝে গত ৩-০৬-২৪ইং তারিখে ২য় ধাপের দুইহাজার পাঁচশত (২৫০০/-) টাকা আবার সকলের মোবাইলে আসলেও ভুক্তভোগী লাইলী বেগমের ফোনে কোন টাকা না আসায় এবারেও সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারেন পুনরায় ইউপি সদস্য বিভূতি কুমার রায় এর নম্বরে টাকা প্রদান করা হয়েছে। ভুক্তভোগী লাইলী বেগমের সন্তান ইউপি সদস্য বিভূতির সাথে যোগাযোগ করে জানান ‘এর আগের টাকা তো খাইলেন এইবারের টাকা টা দেন আমার মা খুবই অসুস্থ ঔষধ কিনবো টাকা নাই, দরকার হলে কিছু টাকা দেন কিছু আপনি নেন’। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য বিভূতি উল্টো তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন গালি-গালাজ করেন এবং বলেন যখন সুবিধা হবে তখন টাকা দিবেন বেশি বাড়াবাড়ি করলে উল্টো ভাতা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। ভুক্তভোগী উপায় না পেয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উক্ত অভিযোগ পত্রে ইউপি চেয়ারম্যান কে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে পুনরায় ইউপি চেয়ারম্যান এর নিকট পাঠিয়ে দেন। এতে করে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর জনমনে ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে যেখানে ইতিপূর্বে চেয়ারম্যান এর নিকট বিচার না পেয়ে ভুক্তভোগী নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরেও ভুক্তভোগী কে পুনরায় ইউপি চেয়ারম্যান এর নিকট সমাধানের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া কতটুকু যুক্তযুক্ত বলে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।ভুক্তভোগী লাইলী বেগম জানান, ‘মেম্বার প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন চেয়ারম্যান এর নিকট বিচার না পেয়ে ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিলাম, এখন ইউএনও স্যার আবার চেয়ারম্যান এর কাছে যাইতে বলে তাহলে আমরা গরীব-দুঃখীদের বিচারের কোন যায়গা নেই’।অভিযুক্ত ইউপি সদস্য বিভূতি জানান, “আমার ভূল হয়েছে, টাকা দিয়ে দিবো। ‘প্রথমবারের কিছু টাকা আমি নিছি কিছু টাকা ওদের দিয়েছি। ২য় ধাপের টাকা টা আমার মোবাইলে আসছে এটা সত্য, আমি একটু অভাবে আছি খরচ করে ফেলেছি দুই-একদিনের মধ্যে দিয়ে দিবো”।
ইউপি চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘ইউএনও মহোদয় আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন আমি সমাধান করবো এখানে সাংবাদিকতার কিছু নাই’।সচেতন মহলের দাবী প্রতিবন্ধীর টাকা আত্মসাৎ করার পরেও যদি কোন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হয় তাহলে প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।
Leave a Reply