এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুড়ায় এক বাড়িতে বিস্ফোরণে তিন কিশোরীসহ চার নারী আহত হয়েছেন। স্থানীয়দের দাবি, সহোদর রেজাউল ও রাশেদুল ওই বাড়িতে অবৈধভাবে পটকা তৈরির কারখানা পরিচালনা করতেন। বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ। রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে শহরের মালতিনগর এলাকার মোল্লাপাড়ায় রেজাউল করিম ও রাশেদুল ইসলামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশাসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।বিস্ফোরণে আহতরা হলেন- রেজাউলের স্ত্রী রেবেকা ইসলাম (৩৮), মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৫), ভাই রাশেদুল ইসলামের মেয়ে জিম (১৩) ও প্রতিবেশি আলী হোসেনের মেয়ে তানজিম বুশরা (১৪)। তাদের উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিস্ফোরণের সময় এ চারজনই বাড়িতে ছিলেন।সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের মালতিনগর মোল্লাপাড়ায় টিনের ছাউনি দেওয়া আধাপাকা চার কক্ষের এক বাড়িতে রেজাউল ও রাশেদুল পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তারা লাল মিয়া ও রেজিয়া বেগম দম্পতির ছেলে। বিস্ফোরণে ঘরের টিনের চাল উড়ে গেছে। এছাড়া বাড়ির পাকা দেওয়ালসহ ঘরের খাট, আলমিরা, আসবাবপত্র ও বেড়া দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। বাড়ির ভেতরে আঙিনায় একটি বস্তায় বিপুল পরিমাণে পটকা ও তিনটি গ্যাস সিলিন্ডার আছে। তবে এই বিস্ফোরণের পরও গ্যাস সিলিন্ডারগুলো অক্ষত অবস্থায় দেখা যায়। এছাড়া বস্তায় থাকা পটকাগুলোটে বারুদ ছিল কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।আতিকুর রহমান নামের এক প্রতিবেশী বলেন, বিস্ফোরণের শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। বেরিয়ে দেখি রেজাউলের বাড়ি একরকম উড়ে গেছে। তার স্ত্রীসহ চারজন বাড়ির টিন ও আসবাবপত্রের নিচে চাপা পড়ে আছেন। সেখানে উপস্থিত মানুষদের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।সাকিব আল হাসান নামের আরেক প্রতিবেশী বলেন, বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে এখানে এসে দেখি বিধ্বস্ত অবস্থা। এই বাড়িতে রেজাউল ও রাশেদুল দুইভাই মিলে অবৈধভাবে পটকার কারখানা চালাতেন। সেখান থেকে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।বাড়ির মালিক রেজাউল করিম বলেন, বিস্ফোরণের সময় আমি ও ভাই নামাজে ছিলাম। শব্দ পেয়ে বেরিয়ে দেখি সব শেষ। ঘটনার সময় বাড়িতে আমার স্ত্রী, মেয়ে, ভাইয়ের মেয়ে ও এক প্রতিবেশী ভাতিজি ছিল। পটকা কীভাবে এসেছে জানি না। আমি, খড়ির ব্যবসা করি।বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক খন্দকার আব্দুল জলিল বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম গ্যাস সিলিন্ডার থেকে এই বিস্ফোরণ হতে পারে। বাড়িটি থেকে তিনটি গ্যাস সিলিন্ডার উদ্ধার করেছি। তবে সেগুলো অক্ষত আছে। সিলিন্ডার লিকেজ থেকে এ বিস্ফোরণ কি না তা আমরাও তদন্ত করছি।বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দরকার। পরিবারটি যেহেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের আর্থিক ক্ষতির দিকটা আমরা দেখার চেষ্টা করবো।
শজিমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মহসীন আলী বলেন, আহত চারজনের শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। তাদের মধ্যে বুশরা নামের এক কিশোরীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল ঘিরে রাখা হয়েছে। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। ঘটনাস্থল থেকে বস্তাভর্তি পটকা উদ্ধার করা হয়েছে। সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply