ফরহাদ,চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং তারিখ ০৯:০০ ঘটিকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন বিশ্বরোড মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অজ্ঞান/মলম পার্টির সক্রিয় সদস্য ১। মোঃ রিপন শেখ (৫৩), (মূলহোতা) পিতা-মৃত খায়রুল আলম (মিনু), সাং-কাচনা, থানা-মোল্লারহাট, জেলা-বাগেরহাট শেখ আশিক (৩৫), পিতা-শেখ বাদশা মিয়া, সাং-মিয়াপাড়া, থানা-গোপালগঞ্জ সদর, জেলা-গোপালগঞ্জদেরকে গ্রেফতার করে এবং অপর ০১ জন আসামী ৩। বোরহান শেখ (৪২), পিতা-রুস্তম শেখ, সাং-চরকান্দি, থানা-মোল্লাহাট, জেলা-বাগেরহাট কৌশলে পালিয়ে যায়।গ্রেফতারকৃত আসামী অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় সদস্য। তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘবদ্ধভাবে মানুষের চোখে মলম বা খাবারের সাথে কড়া ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে কৌশলে ভিকটিমকে খাওয়াইয়ে অজ্ঞান করে তাদের কাছে রক্ষিত মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেয়। হকার কিংবা সহযাত্রী-বন্ধু সেজে সাধারণ মানুষের সব কিছু কেড়ে নিচ্ছে এই অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা।উল্লেখ্য, ভিকটিম মোঃ কাইয়ুম (৩৫) কর্মসূত্রে ওমানে থাকে। গতকাল ওমান থেকে দেশে ফিরে তার গ্রামের বাড়িতে আসার জন্য ঢাকা থেকে চাপাই ট্রাভেলস এর একটি বাসে ওঠে। তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানায়। ঢাকার কাউন্টারে অবস্থানকালে তার সাথে থাকা ব্যাগপত্র দেখে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা বুঝতে পারে যে সে বিদেশ ফেরত যাত্রী। কৌশলে তারা ভিকটিমের পাশের সিটে টিকিট কাটে। যাত্রাপথে ভিকটিমের সাথে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে সখ্যতা তৈরি করে। সিরাজগঞ্জে এসে যাত্রা বিরতির পর বাস চলা শুরু করলে ভিকটিমকে তারা বিশেষ ওষুধ মেশানো জুস খাওয়ায়। ভিকটিম কিছুক্ষণ পর অসুস্থ বোধ করলে বাসের সুপারভাইজার কে ডাকে। সুপারভাইজার তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে যাত্রাপথে কারো দেওয়া কোন কিছু খেয়ছে কিনা তা জিজ্ঞাসা করে। সুপারভাইজারকে তার পাশের সিটে বসা যাত্রীর জুস খাওয়ানোর কথা জানায়। ইতিমধ্যে বাস চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিশ্বরোডে এসে পৌঁছায়। অন্যান্য যাত্রীদের সহায়তায় পাশে থাকা ব্যক্তি মোঃ রিপন শেখ (৫৩) কে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে তিনি এলোমেলো উত্তর দিতে থাকেন। বাসের সুপারভাইজার র্যাব-৫, সিপিসি-১ এ খবর দিলে আভিযানিক দল দ্রত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। অসুস্থ অজ্ঞান ভিকটিমকে সাথে সাথে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। আভিযানিক দলের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এর সাথে জড়িত অপর আরেকজন আসামি শেখ আশিক (৩৫) কে বাসের ভিতর থেকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে দুজনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সাথে জড়িত অপর পলাতক আসামি বোরহান শেখ (৪২) এর নাম বের হয়ে আসে।
এ খানে আরোও উল্লেখ্য, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত আসামিরা আরো জানায় টার্গেট ঠিক করার পরে এক একজন এক এক দায়িত্ব পালন করে। আসামি মোঃ রিপন শেখ (৫৩) এর বাড়ি বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জে। পার্টির অন্যান্য সদস্যরা তাকে গুরু বলে ডাকে। সে যাত্রীর সাথে সখ্যতা তৈরি করে এবং যাত্রীকে অজ্ঞান করার জন্য ওষুধ মিশ্রিত পানি অথবা জুস অথবা ডাবের পানি খাইয়ে থাকে। আসামি শেখ আশিক (৩৫) এই লাইনে তুলনামূলক নতুন। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরে। তার দায়িত্ব আশপাশ খেয়াল রাখা। আশেপাশের কেউ গুরু রিপন শেখের কর্মকান্ডে সন্দেহ করছে কিনা তা জানানো। পলাতক আসামি বোরহান শেখ (৪২) এর বাড়ি খুলনা।তার দায়িত্ব গুরু রিপন শেখ টার্গেটকে অজ্ঞান করে ফেললে টার্গেটের সাথে থাকা টাকা-পয়সা, মূল্যবান জিনিসপত্র রিপন শেখ এর কাছ থেকে নিয়ে নেওয় এবং দ্রæততম সময়ে পরবর্তী স্টপেজে বাস থেকে নেমে যাওয়া।পলাতক আসামিকে আটক এবং এই চক্রের সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য সদস্যদের তথ্য উদঘাটনের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।উপরোক্ত ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
Leave a Reply