আল আমীন,নালিতাবাড়ী প্রতিনিধিঃ
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান মধ্যপাড়া এলাকার চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার অন্যতম আসামী কানন মিয়াকে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সোমবার সকাল ১০টায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা।র্যাব জানায়, ভিকটিমের বাবা একজন রিক্সাচালক। জীবিকার তাগিদে স্ত্রীকে নিয়ে গাজিপুর চৌরাস্তায় বসবাস করতো। তাদের তিন কন্যাকে বিভিন্ন স্থানে বিবাহ দেন। অপরদিকে ছোট মেয়ে শারমিন আক্তারকে একই এলাকার মো. রুহুর আমিনের ছেলে মো. রাসেল মিয়ার সাথে গত ৩ বছর পূর্বে বিবাহ দেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে শামীম নামের একজন ছেলে সন্তান জন্মগ্রহন করার ৯মাস পূর্বে তার স্বামী মালয়েশিয়ায় চলে যায়।স্বামী বিদেশে যাওয়ার পর ভিকটিম তার সন্তানকে নিয়া শ্বশুর বাড়ীতে থাকতো। ভিকটিম শ্বশুর বাড়ীতে থাকাবস্থায় রাজিব নামে এক যুবকের সাথে ভিকটিমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সম্পর্কের জেরে রাজিব তার বন্ধু কানন মিয়ার সাথে যুক্তি পরামর্শ করে ভিকটিমের স্বশুর বাড়ীতে দেখা করতে যায়। ২০২৩ সালের ১১আগষ্ট রাতে ভিকটিমের শ্বশুর বাড়ীতে গিয়ে রাজিব ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। এসময় কানন মিয়া সুকৌশলে তাহাদের নগ্ন অশ্লীল ভিডিও চিত্র মোবাইল ফোনে ধারন করে। এই ভিডিও চিত্র কানন মিয়া তার বন্ধু রাব্বির মোবাইল ফোনে পাঠিয়ে দেয়। এরপর থেকে রাব্বি ও কানন মিয়া ভিকটিমকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি সহ কু-প্রস্তাব দেয়। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে ভিকটিম তার সন্তানকে নিয়া ঢাকায় চলে যাওয়ার পর ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর ভিকটিমের ছেলেটি মারা যায়। এরপর ভিকটিমসহ সকলেই তাদের গ্রামের বাড়ীতে চলে আসে। এর ৪ দিন পর ভিকটিমকে তার দাদীর বাড়িতে রেখে বাদী তার স্ত্রীকে নিয়ে পুনরায় ঢাকায় চলে যায়।
ভিকটিম বাড়ীতে থাকাবস্থায় রাব্বি ও কানন মিয়া ভিকটিমকে পূর্বের ধারনকৃত ভিডিও চিত্র দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দিয়ে ২০২৩ সালের ৯ডিসেম্বর কানন মিয়া ফোনের মাধ্যমে ভিকটিমের পূর্বে ধারনকৃত অশ্লীল ভিডিও চিত্র ডিলিট করার আশ্বাস দিয়ে রাব্বির বাড়ীতে আসতে বলে। ভিকটিম কানন মিয়ার কথা মতো রাব্বির বাড়ীতে গেলে রাব্বি পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের অশ্লীল ভিডিও তারা এলাকার বিভিন্ন লোকের মোবাইলে ছড়িয়ে দেয়। এ বিষয়ে ভিকটিমের বাবা নালিতাবাড়ী থানায় ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইন মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে আসামীরা গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে ছিল।পরে র্যাব-১৪, কোম্পানী কমান্ডার মেজর আবরার ফয়সাল সাদীর নেতৃত্বে র্যাব-২, এর সহযেগীতা নিয়ে সোমবার সকালে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে কানন মিয়াকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
Leave a Reply