মিঠু মিয়া,গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের শ্রীপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ১০ সদস্য অনাস্থাপ্রস্তাব দায়ের করেছেন। গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৩ নং শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মুকুল ও ইউপি সচিব মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে রবিবার (১৬এপ্রিল) গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক ও উপ পরিচালক (স্থানীয় সরকার বিভাগ বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মুকুল এর প্রতি ১০ ইউপি সদস্য অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। ফলে শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।অভিযোগে জানাযায়, গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৩নং শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ মিজানুর রহমান ও চেয়ারম্যান মোঃ আজহারুল ইসলাম মুকুল দীর্ঘদিন থেকে যোগসাজশে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছিল। সচিব একজন সু চতুর ও জালিয়াতি প্রবন ব্যক্তি।২০-৩-২০২৩ খ্রি. তারিখ পর্যন্ত এনজিও কর্তৃক শুধু চারটি ষ্টান্ডিং কমিটি গঠন ছাড়া এখন পর্যন্ত বাকি ০৯ টি স্টান্ডিং কমিটি গঠন করেননি। যে কারনে জনগণের কাছ থেকে আদায়কৃত ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স এর টাকা কোন হিসাব- নিকাশ না করে সচিব ও চেয়ারম্যান যোগসাজশে আত্মসাৎ করেন। যা এখন পর্যন্ত কোন রেজুলেশনের মাধ্যমে সদস্যদের অবগত করা হয়নি।এ ছাড়াও ২০২২-২৩ অর্থ বছরের মাতৃকালীন ভাতা ইউপি সদস্যদের না জানিয়ে রেজুলেশন ছাড়া সচিব ও চেয়ারম্যান নিজের ইচ্ছায় সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দিয়েছেন।২০২২-২৩ অর্থ বছরের উন্নয়ন সহায়তা তহবিল ওয়ার্ড সভা এবং সদস্যদের রেজুলেশন ছাড়া প্রকল্প জমা দিয়েছেন।এদিকে গত ৯-৩-২০২০ তারিখ সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের সময় ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের বরাদ্দকৃত,,, ৬,২১,২০০.০০/- (ছয় লক্ষ একুশ হাজার দুইশত) টাকার বরাদ্দ কম্পিউটার থেকে ডাউনলোড করে সচিব মিজানুর রহমান প্যানেল চেয়ারম্যানকে স্বাক্ষর করতে বলেন। প্যানেল চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ ইউপি সদস্যদের সাথে আলোচনা না করে স্বাক্ষর করতে অপারগতা প্রকাশ করলে সচিব ও চেয়ারম্যানের নিজস্ব ব্যক্তি মোঃ জহুরুল ইসলাম (সাদা) এর কাছ থেকে চেয়ারম্যানের জাল স্বাক্ষর নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে জমা দেয়। ঐই সময় চেয়ারম্যান পবিত্র ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করেন, যা তার পার্সপোর্ট ও ভিসা দেখলে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যাবে।এ ছাড়াও বিগত দিনের উদ্যোক্তাকে বাদ দিয়ে নতুন অযোগ্য অদক্ষ উদ্যোক্তা নিয়োগ দেন এবং চেয়ারম্যান নিজস্ব লোক মোঃ আতিকুর রহমানকে উদ্যোক্তার অফিসে বসান। সে হরহামেশায় বিভিন্ন ব্যক্তির স্বাক্ষর জাল করে থাকেন। এছাড়াও সাধারণ জনগণ ও ইউপি সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দকৃত হাট-বাজারের ১%, ১০% বরাদ্দ ইউপি সদস্য/সদস্যাদের সাথে আলোচনা না করেই চেয়ারম্যান নিজে ইচ্ছামত বন্ঠন করেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদের সভা না করেই সভার ভুয়া রেজুলেশন প্রদর্শন এবং ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে কাজ না করেই কাগজে-কলমে উন্নয়ন কাজ দেখিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন।এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মোঃ মামুনুর রশিদ বলেন, নানা ভয়ভীতি উপেক্ষা করে আমরা সম্মিলিতভাবে গত ১৬ এপ্রিল জেলা প্রশাসক এবং উপ- পরিচালক (স্থানীয় সরকার বিভাগ) বরাবরে চেয়ারম্যান মুকুলের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে লিখত অভিযোগ দায়ের করেছি।এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত শ্রীপুর ইউনিয়নের সচিব মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রনিত।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আজহারুল ইসলাম মুকুলের সাথে ফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা ষড়যন্ত্রমূলক, মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ- পরিচালক মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত সচিব ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply