নিরেন দাস,বিশেষ প্রতিনিধি:
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ‘ইসরাইল-ফিলিস্তিন সীমান্তের পর এখন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত খুবই ভয়ংকর। সীমান্ত অঞ্চলের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় দিন পার করছে। বিএসএফ (ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী) সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার ঘোষণা তারা রাখেনি। প্রায় প্রতি সপ্তাহে তারা বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা করছে।’তিনি বলেন, ‘বিএসএফ তথা ভারত বাস্তবে বাংলাদেশের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে প্রতারণা করে আসছে। তাদের এসব তৎপরতা কোনো সৎ প্রতিবেশীর পরিচয় নয়; বরং বাংলাদেশবিরোধী আগ্রাসী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। ভারতের প্রতি অনুগত থাকার কারণে বাংলাদেশ সরকার উপযুক্ত প্রতিবাদ করতে পারে না।মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল এসব কথা বলেন।সাইফুল হক বলেন, ‘বিএসএফ প্রধান ঢাকা থেকে ভারত ফিরে যাওয়ার পরপরই মাত্র এক সপ্তাহেই নওগাঁ ও লালমনিরহাট সীমান্তে তিন বাংলাদেশি যুবক প্রাণ হারিয়েছেন। কেবল ২০২৩ সালে বিএসএফ হাতে ৩০ জনের বেশি বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আর গত সাত বছরে বিএসএফের গুলি ও অত্যাচারে প্রাণ হারিয়েছেন দুই শতাধিক বাংলাদেশি নাগরিক, আহত হয়েছেন অনেকে।অধিকাংশ ক্ষেত্রে সীমান্তে লেনদেনে সমস্যা হলেই বিএসএফ মারমুখী হয়ে উঠে এবং গুলি চালিয়ে বাংলাদেশিদের প্রাণনাশ করে।’তিনি বলেন, ‘ভারতের উপেক্ষা ও অবহেলার কারণে এখনো পর্যন্ত তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি প্রবাহে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা পাওয়া যায়নি। বাণিজ্যিক ভারসাম্য এখনো বাংলাদেশের প্রতিকূলে। বস্তুত বাংলাদেশ ভারতকে ট্রানজিট সুবিধাসহ তাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যাদির সমাধান করে দিলেও কাঁটাতারের বেড়ায় ফেলানির লাশের মতো বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো তারা ঝুলিয়ে রেখেছে।
সাইফুল হক আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকারগুলোর ভারত তোষণনীতি, বিশেষ করে গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের ভারত অনুগত পররাষ্ট্রনীতির কারণে সীমান্ত হত্যা বন্ধ, পানির ন্যায্য অংশীদারিত্ব, বাণিজ্যিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠাসহ বাংলাদেশবিরোধী বহুমুখী অপতৎপরতা বন্ধ করানো যায়নি। আওয়ামী লীগ সরকার যখন প্রায় প্রতিদিন ঘোষণা করছে যে, বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব এখন সর্বোচ্চ শিখরে তখন প্রায় প্রতি সপ্তাহে সীমান্তে বাংলাদেশের মানুষের রক্তে এই বন্ধুত্বের নির্মম দায় শোধ করতে হচ্ছে। আমরা এসব তৎপরতা অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানাই।সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সদস্য সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন,জোনায়েদ হোসেন, শাহাদাৎ হোসেন শান্ত প্রমুখ।
Leave a Reply