1. info@dainikashardigonto.com : দৈনিক আশার দিগন্ত : দৈনিক আশার দিগন্ত
  2. info@www.dainikashardigonto.com : দৈনিক আশার দিগন্ত :
সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ছেঁউড়িয়ায় আধ্যাত্মিক সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র ১৩৪ তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে জম-জমাট আখড়াবাড়ি কলমাকান্দায় দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত আজকের এই ক্ষুদে খেলোয়ার আগামী দিনের ভবিষ্যৎ –অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আরাফাত বগুড়ার কাহালুতে ধর্ষণের অভিযোগ এনে কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা যমুনায় জেগে ওঠা চরাঞ্চল দখল করে নিচ্ছে প্রভাবশালী মহল জাঁকজমকপূর্ণ পূজা উদযাপন করলো জৈন্তাপুর হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্তগণ– নাজমা বেগম বগুড়ায় সিঁদুররাঙা হাসিমুখে দেবীকে বিদায় বগুড়ায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব সুন্দরগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

একজন আরজ আলী,র গল্প

  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০২৪
  • ৭৩৪ বার পড়া হয়েছে

আল আমীন,নালিতাবাড়ী শেরপুর প্রতিনিধিঃ

মোবাইল মোবাইফোনে তুলা ছবি ঘাটতে গিয়ে একটি ছবি দেখে আটকে গেলাম৷ এক হাতে একতারা আরেক হাতে খঞ্জনী হাতে একজন লোকের সাথে আমরা ক’জন ক্যামেরা বন্দি হয়েছিলাম৷ ছবিটি কিছুদিন আগের তুলা৷ অনেকদিন পর হঠাৎ ছবিটি দেখে লোকটির সম্পর্কে কিছু লেখার খুব আগ্রহ হলো৷ নাম আরজ আলী৷ পেশায় একজন বাউল শিল্পী৷  যেভাবে দেখা হলো আরজ আলী সাথে—ঘুরে বেড়াতে কার না ভালো লাগে! বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে অথবা কাজের ফাঁকে একটু সময় পেলে; তা যদি আবার হয় আপনার কাছের মানুষ বা সহকর্মীদেরসাথে! পুরো সপ্তাহ কাজের চাপে কাছের মানুষ বা সহকর্মীদেরকে তো সময় দিয়ে উঠতে পারি না।তাই যখনই সময় পাই, নতুন কোন জায়গায় সবাই একসাথে ঘুরে বেড়াই৷ কিছুদিন আগেও তেমনি আমাদের কয়েকজন সাংবাদিক বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলাম নেত্রকোনার বিজয়পুরে৷ উদ্দেশ্য ছিল সেখানকার চিনামাটির পাহাড় দেখা৷ তো যেমন ভাবা তেমন কাজ৷ বেরিয়ে পড়লাম৷ সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান, এম. সুরুজ্জামান, আজিনুর রহমান ও আল-আমিনসহ আরও কয়েকজন সহকর্মীর সাথে৷ মোটরসাইকেলযোগে শেরপুরের গারো পাহাড়ের নাকুগাঁও থেকে প্রায় দেড়ঘন্টায় সীমান্ত সড়কপথ পেরিয়ে দুপুরে পৌছে গেলাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুরের চিনামাটির পাহাড়ে৷নেত্রকোণা জেলার বিরিশিরি অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান। সেখানকার বিজয়পুর সাদা মাটির জন্য খ্যাত। দুর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুর ও এর আশপাশের এলাকায় আছে চিনামাটির খনি। চিনামাটি মূলত সিরামিক শিল্পের কাঁচামাল। এটি এক দিকে যেমন দর্শনীয় স্থান, পাশাপাশি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের কোলঘেঁষা সীমান্তবর্তী অঞ্চল। চিনামাটির পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে সেখানে ভিড় জমায় পর্যটকরাযেখানেই দেখা মিলল আরজ আলীর সাথে৷ ভির ঠেলে কাছে গিয়ে দেখলাম যে আপন মনে গান গেয়ে চলেছে৷ তার গান শুনতে চারপাশে ভিড় জমিয়েছে ঘুরতে আসা পর্যটকরা।আসরও জমেছে বেশ। আমরাও আনন্দে তার তার গানে যোগ দিলাম৷ গান শেষ হতেই আমাদের সঙ্গে অল্প কথা হয় আরজ আলীর।খোঁজ নিয়ে জানা যায় দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের বালিচান্দা গ্রামের বাসিন্দা আরজ আলী। স্ত্রীকে নিয়েই ৬২ বছর বয়সি আরজ আলীর সংসার। দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের বাবা তিনি। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেও বিয়ে করে জীবিকার তাগিদে ঢাকা শহরে থিতু হয়েছে। এখন ছেলেমেয়েরা তেমন খোঁজ খবর নেয় না। সঙ্গে কেউ নেই তার। তাতে কি! যার আছে শুধু শ্রুতিমধুর কণ্ঠ। তাকে আর ঠেকায় কে! শ্রুতিমধুর কণ্ঠকে একতারার সুরের সঙ্গে মিলিয়ে করেন গান। গানে মুগ্ধ হয়ে ঘুরতে আসা পর্যটকরা কেউ ১০ কেউবা ২০ টাকা করে বকশিস দেন। দিনশেষে যা আয় হয় তা দিয়েই চলে আরজ আলী বাউলের সংসার।বিজয়পুরের এ পর্যটনকেন্দ্রে প্রতিদিনই হাজারো পর্যটক আসেন। আর ঘুরতে আসা পর্যটকদের গান শুনিয়ে মুগ্ধ করেন পথের বাউল আরজ আলী।আরজ আলীর সাথে কথা বলে যেটুকু জেনেছি, অভাবে দিনাতিপাত করলেও তিনি কখনো ভিক্ষাবৃত্তি করেন না৷ তার ভাষ্য, ভালো কন্ঠ আছে, সে কন্ঠ দিয়ে গান গেয়ে মানুষের দেওয়া সামান্য অর্থেই ঘুরে সংসারের চাকা৷ঘুরতে এসে গানের আসরে অংশ নেওয়া কয়েকজন পর্যটক বলেন, আমরা চিনামাটির পাহাড়ে ঘুরতে এসে গানপ্রেমী আরজ আলীকে পেলাম। ঘুরতে আসা লোকজনকে আরজ আলী গান শুনিয়ে আনন্দে মাতিয়ে রাখেন। আমরাও গান শুনে আনন্দ পেয়েছি।নেত্রকোনা জেলার গণমাধ্যমকর্মী মির্জা হৃদয় সাগর জানান, আরজ আলী একজন অভাবী মানুষ। আমরা অনেকদিন ধরেই দেখছি তিনি পর্যটকদের গান শুনিয়ে দিনাতিপাত করছেন। অভাবে পরে ভিক্ষাবৃত্তি না করে তিনি গান শুনিয়ে যা আয় করেন তা দিয়েই কোন রকম সংসার চালাছেন।এটা সমাজের জন্য অনুপ্রেরণার বিষয়।

এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক তোবারক হোসেন খোকন জানান,আরজ আলী খুবই প্রতিভাবান শিল্পী, সে যে কারো নাম বা স্থান যেকোনো কিছু নিয়েই তাৎক্ষণিক গান বানিয়ে ফেলতে পারেন। তবে পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে আরজ আলীর সাংস্কৃতিক প্রতিভা। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমেই কেবল তার প্রতিভা রক্ষা করা সম্ভব। আমি চাই সরকার থেকে তাকে সহযোগিতা করা হোক তাতে তার প্রতিভা অনেক দূর এগিয়ে যাবে।আবার যদি কখনো চিনামটি পাহাড়ে যাই, দেখা হবে, গান শুনবো আপনার শ্রুতিমধুর কন্ঠে! ভালো থাকুন বাউল শিল্পী আরজ আলী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
𝐂𝐫𝐚𝐟𝐭𝐞𝐝 𝐰𝐢𝐭𝐡 𝐛𝐲: 𝐘𝐄𝐋𝐋𝐎𝐖 𝐇𝐎𝐒𝐓