কাজিপুর(সিরাজগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে চালিতাডাঙ্গা বিবিএন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের নিয়ে পুনর্মিলনী ও চড়ুইভাতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ১৯৮৫ ব্যাচের এস এস সি শিক্ষার্থীরা। দিনব্যাপী জমকালো অনুষ্ঠান শেষে রাতে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেখানে দেখা যায়, ভাড়াটে শিল্পীদের হিন্দি গানের সাথে একের পর এক অশ্লীল নৃত্য, এতে এলাকার বিভিন্ন স্তরের মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ ও আলোচনা-সমেলোচনার ঝড়। যার ক্ষোভ ছড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও। মোবাইলে ধারন করা একাধিক শিক্ষার্থীর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাৎক্ষনাৎ ছড়িয়ে পড়ে এতে দেখা যায় প্রকাশ্য অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে নৃত্য দেখাচ্ছে। সামাজিক এই অনুষ্ঠানে অশ্লীল নৃত্য প্রাক্তন অনেক শিক্ষার্থীদের যারা পরিবার নিয়ে এসেছিল তাদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এমন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির কারনে অনুষ্ঠান ছাড়তে হয় তাদের। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এসএসসি শেষ করার আগেই যেখানে ছাত্রছাত্রীদের এই কুরুচিপূর্ণ, অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্ত করছে শিক্ষকরা সেখানে কি শিক্ষার মান আদোও আছে! কি-না এই প্রশ্ন হাজারো অভিভাবকদের।চালিতাডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় এক সময় এই অঞ্চলের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্কুল ছিল, কারন এখানে ভর্তি হতো অত্র অঞ্চলের কেজি স্কুল, প্রাইমারি স্কুলের সবচেয়ে ভালো ছাত্র-ছাত্রী যার ফলে এসএসসি পরীক্ষায় ১ – ৩০ রোল পর্যন্ত জিপিএ-৫ পেতো এবং অত্র উপজেলার মধ্যে অন্যতম নামকরা স্কুল হিসেবে চিনতো সবাই। যেখানে বর্তমানে শিক্ষার মান একেবারেই নিম্নমানের।বিদ্যালয়ের একাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ক্ষোভ ছড়িয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করেছেন।প্রাক্তন শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম লিখেছেন,”মনে হয় পবিত্র বিদ্যালয়ে অশ্লীল যাত্রাপালা চলতাছে। আয়োজক কমিটি কে ধিক্কার জানাই।আমি একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে এই অনুষ্ঠানের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি!সেই সাথে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের এমন নেক্কারজনক অনুষ্ঠানে জন্য জবাবদিহি করতে হবে।”শামছুল হক নামের একজন লিখেছেন, ”৩০ বছরের ওয়াজ মাহফিলের মঞ্চে পুনর্মিলনীর নামে অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শন। পরিচ্ছন্ন আয়োজনের আভাস দিয়ে শুরু করলেও সবশেষে নোংরা উত্তাল অসামাজিক নৃত্য দিয়ে আয়োজকেরা আমন্ত্রিত অতিথি ও সিনিয়রদের চরম অপমান করেছেন। এই মিলন মেলায় একই পরিবারের বাবা,মা,ভাই,বোন নিয়ে অনেকেই উপস্থিত হয়েছিলেন কিন্তু এসব দেখে লজ্জিত হয়ে বেরিয়ে গেছে অনেকেই। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে এসব বেহাপনার মানে কি তা আমার বোধগম্য নয়।”পিয়াল নামে প্রাক্তন এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, “দেশে রুচির দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে জানি কিন্তু তার প্রভাব যে আমার স্কুলে পড়বে তা জানতাম না।”রাকিব আজাদ মুরাদ তার পোস্টে লিখেছে আমার মা এবং বাবা দুজনেই ১৯৮৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। ভাগ্য ভালো উনি বিকেলেই বাসায় চলে আসছিলেন। তাছাড়া এমন কুরুচিপূর্ণ অবস্থার সম্মুখীন হতেন তিনি।এ সব কারণেই আমি আমার আম্মুকে যেতে দেই নাই। ছোটবেলা থেকে আব্বু আম্মুর মুখে শুনতাম চালিতাভাঙ্গা স্কুল থেকে যারা এসএসসি পাস করেছে তাদের অনেকেই নাকি বড় বড় মানুষ হয়েছে। কিন্তু গতকাল সেই ধারণা আমার কাছে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। যারা নিজের মেয়ের বয়সী মেয়েকে টাকা দিয়ে ভাড়া করে এনে নাচাতে পারে তারা যে কি বড় মাপের মানুষ হয়েছে তা আমার বোঝা হয়ে গেছে!বেপরোয়া মনির নামের একজন লিখেছেন, সারাদিনের সব ভালো কিছুর পর সন্ধার পর যে গান বাজনা হয়েগেলো তাতে পুরো পরিবেশটা নষ্ট করে দিয়েছে।প্রাক্তন শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলেন, শিক্ষিতমহলের পূর্নমিলনী হওয়ার কথা কিন্তু রাতের অশ্লীল নৃত্য দেখে মনে হয় না এখানে শিক্ষিত লোকজন আছে।এ দিকে বিদ্যালয়ে এতো বড় আয়োজন হলেও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দাওয়াত না দেওয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে গেলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, অনুষ্ঠানের সর্ব বিষয়ে দায় দায়িত্বে ছিল এসএসসি ৮৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে ঐ ব্যাচের আনোয়ারুল ইসলাম, বর্তমানে তিনি সম্ভবত বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সচিব, তার মামা এনামুল এবং আফজাল হোসেন কলেজের কম্পিউটার শিক্ষক। আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষ আমণ্ত্রিত অতিথি হিসেবে ছিলাম। অশ্লীল নৃত্য বন্ধ করতে নিষেধ করে ছিলাম। বন্ধ না করায় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নজরুল ইসলামকে রেখে আমি চলে যায়। এরকম অনুষ্ঠানের জন্য আমি খুবই লজ্জিত। বিদ্যালয়ের সভাপতি অসুস্থতার জন্য অনুষ্ঠানে আসতে পারেন নাই, ঘটনা শুনে তিনিও দুঃখ প্রকাশ করেন।কাজিপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দফতের একাডেমিক সুপারভাইজার আতিকুর রহমান জানান, চালিতাডাঙ্গা বিবিএন উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানে শিক্ষা অফিসের কোনো কর্মকর্তাকে দাওয়াত করা হয়নি, অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন দুঃখজনক। অনুষ্ঠানের বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটির দেখভালের দায়িত্ব
Leave a Reply