এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
প্রচীন পুন্ডুনগরি হিসাবে খ্যাত বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা। এ উপজেলা ১৯৮৩ সালের ২৪ মার্চ গঠিত হলেও পৌরসভা গঠিত হয় ২০০২ সালে। এটি ‘গ’ শ্রেণির একটি পৌরসভা। পৌরসভার মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার। শিক্ষা হার প্রায় ৯৫%। পৌর উপ-নির্বাচনে শুরু শিষ্যের হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই, কে হবে পৌর পিতা।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক মেয়র তৌহিদুর রহামন মানিক অংশ নেওয়ার জন্য গত ২৭ নভেম্বর ২০২৩ ইং তারিখে মেয়র পদ হতে পদত্যাগ করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনীত বগুড়া ২ শিবগঞ্জ আসনের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ্কে আসনটি ছেড়ে দিতে হয়। ফলে সাবেক মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি। মেয়র পদটি শূন্য থাকায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গত ২৩ জানায়ারীতে মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের তপশীল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তপশীল অনুযায়ী ৪জন মেয়র প্রার্থী মনোনয়ন পত্র উত্তোলন ও দাখিল করে। এতে দেখা যায়, অগ্রজ উপজেলা আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক এর শিষ্যে হিসাবে খ্যাত অনুজ শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজ্জাকুল ইসলাম রাজু গুরুকে চ্যালেঞ্জ করে মেয়র পদে প্রার্থী হন। অন্য দুই মেয়র প্রার্থী হলেন ওষুধ ব্যবসায়ী হামদান মন্ডল ও সমাজ সেবক আব্দুল খালেক। এ দুজন মেয়র প্রার্থী হলেও মূল আলোচনায় রয়েছে মানিক ও রাজু। তাদের মধ্যেই হবে মূল লড়াই। এ বারের মেয়র পদে উপ-নির্বাচন বিভিন্ন কারণে জটিল হয়ে উঠেছে। এ কারণ হিসাবে সাধারণ ভোটাররা বলেছে এবারের নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন স্পষ্টত দুভাগে বিভক্ত হয়ে পরেছে। কেউ বলছে সাবেক মেয়র মানিক তার অভূতপূর্ব উন্নয়নের কারণে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হবে। আবার কেউ বলছে অনুজের কাছে অগ্রজ পরাজিতও হতে পারে। তবে শেষ সময়ের হিসাব নিকাশ ভাবাচ্ছে প্রার্থী ও ভোটারদের।নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, পৌরসভা উপ-নির্বাচনে মোট ভোটার ১৯ হাজার ৪৭৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৬৩০ জন ও নারী ভোটার ৯ হাজার ৮শত ৪৩ জন। যা পুরুষ ভোটারের চেয়ে ২১৩ জন বেশি। এছাড়াও ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোট কেন্দ্র ১১টি, ভোট কক্ষ ৫৫টি, অস্থায়ী ভোট কেন্দ্র ১০টি । ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। এ নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীরা জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। প্রতিশ্রুতির বিষয়ে জানতে চাইলে নারিকেল গাছ মার্কার প্রার্থী তৌহিদুর রহমান মানিক বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা দেশে যে উন্নয়ন হচ্ছে এই ধারা অব্যহত রাখতে পুণরায় মেয়র পদে নির্বাচিত হলে শিবগঞ্জ পৌরসভাকে স্মার্ট পৌরসভা হিসেবে গড়ে তোলা হবে। পাশাপশি সকল নাগরিক সেবাকে আরও সহজ করে জনগণের দোড় গোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে।হ্যাঙ্গার মার্কার মেয়র প্রার্থী রিজ্জাকুর রহমান রাজ বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমার বিজয় সু-নিশ্চিত। জননেত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে যে উন্নয়ন করেছে তা বজায় রাখতে পৌরসভাকে আধুনিক ও মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আমি গত দুবার মেয়র নির্বাচিত হয়ে পৌর এলাকার যে উন্নয়ন করেছি তার গত ৫০বছরেও হয়নি।জগ মার্কার মেয়র প্রাথী হামদান মন্ডল বলেন, আমি নির্বাচিত হলে পৌর এলাকার সকল নিরাপত্তা ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবো।এ ছাড়াও মোবাইল ফোন মার্কার মেয়র প্রার্থী খালেকুজ্জামান খালেক বলেন, আমি নির্বাচিত হলে পৌর এলাকার উন্নয়নে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাবো।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, নির্বাচনের সকল ধরণের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে ৯জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ৯টি ওয়ার্ডে সার্বক্ষণিক নির্বাচন তদারকির দায়িত্বে থাকবে। এছাড়াও ২ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের টহল, পুলিশ, আনছারসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সদা তৎপর আছি।
Leave a Reply