এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুড়ার শাজাহানপুরে মাদকের চাইতেও ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে মোবাইলের নেশা। বর্তমান সময়ে মাদকের চেয়ে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে যুবক-যুবতী। এমন দৃশ্য চোখে পড়ছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। বর্তমান সময়ে যুবক- যুবতীরা প্রেমের সমপর্কে সারারাত ফোনে কথা বলছে ম্যাসেজ করছে । কখন যে রাত পার হয়ে যাচ্ছে তারা সেটা বলতে পারছে না। তাছাড়া বড় সমস্যা ফোনে সারাক্ষণ ফ্রী ফায়ার, পাবজি, টিকটকসহ বিভিন্ন গেমে ছোট্ট বাচ্চারাও আসক্ত হয়ে পড়ছে । ছেলে-মেয়েদের হাতে মোবাইল ফোন না দিলে তারা কান্নাকাটি, খাওয়া- দাওয়া ছেড়ে দিচ্ছে । এমনকি মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের রাধানগর হিন্দু পাড়ায় । যেসব ছেলে-মেয়েরা মোবাইলের নেশায় আসক্ত হচ্ছে,তারা জগতের সমস্ত কিছু ভুলে যাচ্ছে। বর্তমানে ছেলে-মেয়েরা কোন খেলাধুলা করতে চায় না। সারাদিন মোবাইল ফোন নিয়েই সময় কাটিয়ে দিচ্ছে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে তাদের নিজের ক্ষতি নিজেরাই করছে কিন্তু তা তারা বুঝতে পারছে না। অভিভাবকরা কোন মতেই মোবাইলের আসক্ত থেকে তাদের সন্তানদেরকে সরাতে পারছে না। মোবাইলে আসক্ত উপজেলার সুনামধন্য ফুলকোট নবোদয় কারিগরী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর কাছে বিভিন্ন কথা বলতে বলতে এক মুহূর্ত সে নিজেই স্বীকার করে বলেন, আমি সত্যিই মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছি। কোনভাবেই এর থেকে বেরিয়ে আসতে পারছিনা। সারাক্ষণ টিকটক, ইউটিউব, ও ফ্রি ফায়ার এ পড়ে থাকি । টিকটকের ভিতর ঢুকলে বের হতে ইচ্ছে করে না। মোবাইলে চার্জ শেষ না হওয়া পর্যন্ত টিকটক ভিডিও দেখতে থাকি। আমার মাসে ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা মোবাইলে খরচ হয়। রাত দুইটা থেকে তিনটা পর্যন্ত মোবাইল দেখে ঘুমাই । যার কারণে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যাচ্ছে । সবকিছু বুঝতে পারছি কিন্তু এর থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি না। উপজেলার ফুলকোট গ্রামের সমাজ সেবক মোঃ জাহিদুর রহমান আমেরিকান ও আব্দুস ছামাদ নামের এক অভিভাবক বলেন, সন্তানদেরকে মোবাইলের নেশা থেকে সরানো দরকার। এরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, এখন থেকে সারাক্ষণ মোবাইল টিপলে তাদের চোখের সমস্যা হবে,তাতে এদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হতে পারে। যে ভাবেই হোক এদের কাছ থেকে মোবাইল নিতে হবে। কারণ মোবাইল ফোনের নেশা, মাদকের চাইতে ভয়ংকর । এ বিষয়ে শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাহমিদা আক্তার শিক্ষক ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন,আপনারা ছেলে-মেয়েদের ক্লাসে এবং বাড়িতে ভালো করে বোঝাবেন ।
বাংলাদেশ ভোকেশনাল শিক্ষক সমিতি বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি শিক্ষক ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান বলেন,ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া ঠিকমতো করছে না, বইখাতা ফেলে অধিকাংশ ছেলে-মেয়েরা মোবাইলে সময় দিয়ে থাকে।অভিভাবকরা মোবাইল ধরতে নিষেধ করলেই আত্মহত্যার হুমকি দেয় সন্তানেরা। বর্তমান প্রজন্ম এইভাবে মোবাইলে আসক্ত হলে ভবিষ্যতে কি যে হবে তা বলা যাচ্ছে না। এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে অভিভাবকদের আরোও বেশি সচেতন হওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।
Leave a Reply