এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুড়া সদরের লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নে জোরপূর্বক এক যুবককে সিএনজি চালিতো অটোরিকশাতে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তার আত্মচিৎকারে জনতা কর্তৃক সিএনজি চালাকসহ ৩ জনকে আটক করেছে। এদের ভিতর একজন পালিয়ে যায়। পরে লাহিড়ীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার আবু নাসের ইঞ্জিনিয়ার আপেল মাহমুদের নির্দেশে তাদের ইউনিয়ন পরিষদের হেফাজতে নেওয়া হয়।ঘটনার বিবরণে জানা যায়, লাহিড়ীপাড়া উত্তর সাতশিমুলিয়া গ্রামের রঞ্জু মিয়ার পুত্র ইমরান আলী খান (১৯)। সে বগুড়ার চারমাথা ভবের বাজার মোস্তাক ফিলিং স্টেশনে ১ বছর হলো পরিবেশনের চাকুরি করেন। চাকুরির সূত্রে ওই ফিলিং স্টেশনের পাশেই হান্নান মিয়ার কন্যা (ছদ্মনাম) তিশা (১৬) এর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তাদের ফেসবুকে মেসেঞ্জারে চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে তাদের সম্পর্ক অটুট হয়। বিষয়টি কোনভাবে মেয়ের পরিবার জানলে পেরে ইমরানকে সতর্ক করে দেন। ওই ফিলিং স্টেশন থেকেও মেয়েটির সাথে কথা না বলার জন্য ইমরানকে নিষেধ করা হয়। ইমরান চাকরি বাঁচাতে ও মেয়ের পরিবারের চাপে গত ৪ মাস আগে তিশার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেসবুকে তাকে ব্লক করে দেয়।গতকাল বৃহস্পতিবার তিশা পরিবার তাকে খুঁজে পাচ্ছিল না। বিকালে তিশার ভাই শান্ত মিয়া একটি সিএনজি চালিতো অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে মোকামতলা তাদের আত্মীয়ের বাড়ীতে তালাশ করতে যায়। সেখানেও তিশার সন্ধান মেলেনা। পরে মেয়ের ভাই শান্ত সন্দেহের তীর ছোড়ে ইমরানের দিকে। তারা মোকামতলা থেকে পীরগাছা বন্দরে এসে ইমরানকে ফোনে বলে আমরা তো তোমাদের এলাকায় আসছি দেখা কর এক সঙ্গে চা খাবো। তাদের কথাতো ইমরান বাড়ী থেকে পীরগাছা গিয়ে তাদের সাথে দেখা করে। এরপর তিশার ভাইসহ আরও ৩ জন তাকে তিশার সম্পর্কে জানতে চাইলে সে বলে গত ৪ মাস হলো তার সাথে কোন যোগাযোগ নাই। পরে ইমরান তাদের গোরস্থান বন্দর এলাকায় চা খাওয়ার দাওয়াত দিলে তারা রাজি হয়ে ইমরানকে সিএনজিতে তুলে নিয়ে গোরস্থান নামক বন্দরের দিকে যায়।পরে ওই বন্দরে সিএনজি না থামিয়ে পুর্বপরিকল্পিত ভাবে তারা ইমরান কে জাপ্টে ধরে বগুড়া চারমাথা নেওয়ার চেষ্টা করে। এতে ইমরান নামতে চাইলে তারা তাকে মারপিট করে। এক সময় ইমরান লাহিড়ীপাড়া বন্দরে বাঁচাও বাঁচাও বলে আত্মাচিৎকার করলে স্থানীয়রা মোটরসাইকেল নিয়ে ওই সিএনজি চালিতো অটোরিকশা ধাওয়া করে আকলাজিয়া ব্রিজ স্থানে গিয়ে তাদের আটক করেন। এসময় উত্তেজিত জনতারা অপহরণকারী ভেবে তাদের উত্তম-মধ্যম দেয়। বিষয়টি লাহিড়ীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার আবু নাসের ইঞ্জিনিয়ার আপেল মাহমুদ কে জানালে, তিনি যেকোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের উদ্ধান করতে ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আল-আমিন বলেন। এরপর ইউপি সদস্য আল আমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে তাদের রক্ষা করে সিএনজি অটোরিকশা সহ ইউনিয়ন পরিষদের হেফাজতে নেয়। পরে রাত ১০টায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে চেয়ারম্যান আপেল পুলিশের শরণাপন্ন হলে উভয় পক্ষের লোকজন পরিষদেই আপোষ মিমাংসার জন্য চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেন। এরপর উভয় পক্ষের ভুলবোঝাবুঝি অবস্থান ঘটিয়ে একটি আপোষ মিমাংসার খসড়া করা হয়। এসময় চেয়ারম্যান জুলফিকার আবু নাসের ইঞ্জিনিয়ার আপেল মাহমুদ বলেন, কেউ অপরাধ করলে আইন আছে, আদালত আছে, স্থানীয় চেয়ারম্যান আছে, মেম্বার আছে। আপনারা একটি ঘটনার জন্য আরেকটি ঘটনার জন্মদিতে যাচ্ছিলেন। ইমরানকে যদি সত্যি আপনারা চারমাথায় নিয়ে যেতেন তাহলে এর অবস্থা কি হতো। আর জনগণ যদি এদের না ছাড়তো তখন কি হতো।
অতঃপর তাদের পুলিশে না দিয়ে মানবিক বিবেচনায় মানবিক চেয়ারম্যান জুলফিকার আবু নাসের ইঞ্জিনিয়ার আপেল মাহমুদ আপোষ মিমাংসা করে তাদের পরিবারের জিম্মায় দেন। চেয়ারম্যানের এমন উদারতা সর্বত্রই প্রশাংসায় ভাসছেন।
Leave a Reply